ঢাকা, ১ জুন : আন্দোলনরত নার্সদের ওপর পুলিশের হামলায় একজনের গর্ভপাতের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া আহত হয়েছে শতধিক নার্স।
বিপিএসসি’র মাধ্যমে নিয়োগ বাতিল এবং জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নার্স নিয়োগের দাবিতে বুধবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের ধানমণ্ডির বাসভন ঘেরাও করে নার্সরা।
এ সময় পুলিশ তাদের সরে যেতে ৩০ মিনিটের সময় বেঁধে দেয় পুলিশ। কিন্তু তারা সরে না গেলে রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ আন্দোলনরত নার্সদের ওপর (নারী ও পুরুষ) অতর্কিত হামলা চালায়।
হামলায় আহত বাংলাদেশ বেসিক গ্র্যাজুয়েট নার্সেস সোসাইটির সভাপতি রাজীব কুমার বিশ্বাস প্রতিবেদককে বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী আমাদের দাবি বাস্তবায়নে একাধিবার প্রতিশ্রুতি দিলেও কথা রাখেননি। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতিও তিনি রক্ষা করেননি। তাই আমরা মন্ত্রীর বাসা ঘেরাও করি। কিন্তু পুলিশ পদে পদে আমাদের ওপর নির্যাতন চালায়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সন্ধ্যা ৭টায় মন্ত্রীর বাসার সামনে অবস্থান নেই। এ সময় রাত ৮টার মধ্যে পুলিশ এই স্থান ছাড়ার নির্দেশ দেয়া। কিন্তু আমরা অবস্থান থেকে সরতে না চাইলে পুলিশ হামলা চালায়।’
রাজীব কুমার দাবি করেন, ‘এ সময় সালাম আক্তার নামের একজন বেকার নার্সের গর্ভপাতের ঘটনা ঘটে। তাকে তাৎক্ষণিক সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
তিনি জানান, ‘এছাড়া আশপাশের অনেক হাসপাতেল প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন অনেক নার্স। এমনকি আমি নিজেও বুকে ব্যথা নিয়ে ল্যাব-এইড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।’
আন্দোলনরতরা একাধিক নার্স জানান, হামলা চালিয়ে নার্সদেরকে মন্ত্রীর বাসার সামনে থেকে উঠিয়ে দেয়া হয়। এ সময় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ধানমণ্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম হোসেন এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘নার্সদের মন্ত্রীর বাসার সামনে থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।’
এক নার্সের গর্ভপাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের তথ্য আমাদের জানা নেই।’
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কে অতিক্রম করার সময় আন্দোলনরত নার্সদের বাঁধা দেয় পুলিশ। এ সময় লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করা হয়। এতে পাঁচজন নার্স আহত হন।
তবে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করেই মন্ত্রীর বাসার সামনে অবস্থান নেন তারা। বিকাল ৫টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিল সহকারে তারা নাসিমের বাসভবনের দিকে মিছিল সহাকারে যাত্রা শুরু করেন।
নার্স নেতারা জানান, বিপিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ বন্ধ এবং জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগের দাবিতে ২৮ এপ্রিল থেকে আন্দোলন করছে তারা। এরমধ্যে একাধিকবার তাদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলেও এখনও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
এদিকে শুক্রবার বিপিএসসির মাধ্যমে নার্স নিয়োগের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তাই এর আগেই এই নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে চান তারা।
এছাড়া গত রোববার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বাসভাবনের সামনে অবস্থান নিলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি দীন মো. নূরুল হক দুদিনে মধ্যে তাদের দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। কিন্তু দুদিন অতিক্রম হলেও দাবি বাস্তবায়িত হয়নি। তারা প্রধানমন্ত্রীর দেখা পাননি।
-যুগান্তর
পাঠকের মতামত: